ফ্রান্সে প্রকাশিত বাংলা ওয়েবজিন। প্রকাশক : প্যাট্রিসিয়া গিদাস, ভ্যান, ৫৬০০০, ব্রিটানি, ফ্রান্স। সম্পাদক : নাসরিন-জয়া হক, চয়ন খায়রুল হাবিব। Contact : choygypsy@yahoo.com

Friday, November 27, 2020

ওলে সোয়িঙ্কা ও রক্তবীজ নাটকের দ্বিতীয় সংস্করণ

।।চয়ন খায়রুল হাবিব্ব।।

২০২১এ প্রকাশনা প্রকল্প হিশেবে হাতে নিয়েছি, ১৯৯০ এ প্রকাশিত আফ্রিকার প্রথম নোবেল জয়ী লেখক সোয়িঙ্কার প্রথম বাংলা অনুবাদ ও মঞ্চায়নের স্মারক দ্বিতীয় সংস্করণ।সোয়িঙ্কার 'স্ট্রং ব্রিড" নাটকটির অনুবাদ করেছিলাম "রক্তবীজ' নামে।

বাঙ্গালির পরিচয় কাব্য

।।চয়ন খায়রুল হাবিব।।

বাহিরবাটী বন্দনা

আমাদের যাপনের মাঝপথে, কোনো এক সময় তুমি আসো 

খোজাখোজির পেরেশানি দেখে স্মিত হেসে পাশে এসে বসো। 

আলোর অরন্যে নামে আধার, 

কি খুজে বেড়াচ্ছি মনে করতে পারি না কেউ আর।

মুর্তজা বশীরের জন্মদিন ও বিদায়

 ।।হাসনাত আবদুল হাই।।রাফী হক।।

শুভ জন্মদিন

মুর্তজা বশীর আমাদের আধুনিক চিত্রকলার পথিকৃৎ শিল্পী । আজ তিনি ৮৭ বছর পূর্ণ করে ৮৮ তে পা দিলেন।
"...মুর্তজা বশীর একজন নিঃসঙ্গ মানুষ। নিঃসঙ্গ চিত্রকর। নিঃসঙ্গ ... আর এটাই হচ্ছে মুর্তজা বশীরের রচনার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য..'। 'জহির রায়হান মুর্তজা বশীরের গল্পগ্রন্থ 'কাঁচের পাখির গান'-এর ভূমিকায় লিখেছেন এই কথাটি ।

বদরজ্জামান আলমগীরের কবিতাগুচ্ছ

।।বদরজ্জামান আলমগীর।। 

অকারণ হাঙ্গামা
তুমি পাতা। আমি হাওয়া।
আমি কারণ ছাড়া তোমাকে তিরতির কাঁপাবো!
তুমি হরিণ। আমি জঙলা।
কখন ভয় পাবে তার আশায় আমি ফকির হয়ে র'বো।

রাবেয়া বসরি, দাউদ আল হাফিজ , জর্জ ফ্লয়েড ও জন ওনাসিস

।।বদরুজ্জামান আলমগীর।।

রাবেয়া বসরীর পলাপলি খেলা

সেই সময় রাবেয়া বসরীর নামে একটা গল্প চাউর ছিল : লোকে দেখে তাঁর এক হাতে আগুন আরেক হাতে পানি নিয়ে বেজান দৌড়ে যাচ্ছেন। এই আগুন আর জল দিয়ে রাবেয়া কী করবেন জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন- পানি ঢেলে দোযখের আগুন নিভাবেন, আর আগুন দিয়ে বেহেস্ত জ্বালিয়ে ছারখার করে দেবেন।

Sunday, November 22, 2020

জ্যানেট উইন্টারসন, প্লাবিত সন্ত্রাসের গল্প

।।নাসরিন-জয়া হক।।

জ্যানেট উইন্টারসনের, 'মেসেজ ইন আ বটলের' অনুবাদ।


*'সহসা সন্ত্রাস ছুঁলো।ঘর-ফেরা রঙিন সন্ধ্যার ভীড়ে

যারা তন্দ্রালস দিগ্বিদিক ছুটলো, চৌদিকে......'

প্রতিটা শক্ত জিনিস তার জলতরলতা ফিরে পেয়েছিল!

বৃষ্টি লম্বা, সোজা ভাবে পড়ছিল, প্রতিটা ফোঁটা দীর্ঘ লাইনে শেষ ফোটাটার সাথে জড়িত, লোহা-ধূসর আকাশ থেকে নেমে সুরক্ষা-শাটারের মতো  শহরের পর শহর রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছিল।

Saturday, November 21, 2020

ঝিনুক ও সমুদ্রের গান।নভেলা।শেষ পর্ব।

।।ফারহিন চৌধুরী।। 

পর্ব: ১২

🍀
রিসোর্টের বারান্দায় রমলা সেন বেশ গভীরভাবে কাগজে কিছু লিখছে। মেজাজ তেমন একটা ভালো নেই। আজ ক্যাফেতেও ঘুরে আসেনি। সকাল থেকে বারান্দায় বসে আছে। বারান্দার নীচে এসে মাজেদ রমলা সেনকে নেমে আসার অনুরোধ জানাল। “ আমার মনটা ভাল নেই। আজকে আমি বের হব না।”

ক্রিম ১।সেক্স-সাইফাই সিরিজ।

।।চয়ন খায়রুল হাবিব।।

মেহেলের সাথে লুপার প্রথম দেখা হয়েছিলো দুরের এক চাদের দেশে ৩০২০ সালে, ছোটবেলায়।এক বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে।

বুক-বালিশের গান ও অন্যান্য কবিতা

।।তৃণা রাব্বানি।।

Quarantine Pillow Challenge!

বালিশে বুক বেধে ফরিদা, রানা, বিষ্ণু ও চয়নকে!

কারা য্যানো 'জুলেখা সিরাপের' বিরুদ্ধে ইনবক্সে কি কি ষড়যন্ত্র করছে,
আর বালিশে বুক বাঁধাছাঁদা আন্দোলনে বাধা দিতে চাইছে!
আরবি ছাড়া অন্য কোনো শব্দ দেখলে এলার্জির হিস্টামিন খাচ্ছে।
নর্তন কুন্দনের ভাষা হিশেবে অবশ্য হিন্দিকে নিচ্ছে।

তবুও শুভ নববর্ষ ১৪২৭!

।।বাবলী হক।।
চৈত্র শেষে লাল পাড় সাদা শাড়ি পরে, বেলিফুল জড়িয়ে এ শহরে বৈশাখ আসত। ইলিশ পান্তা আর ছায়ানটের গানে রমনা বটমূলে শহর জেগে উঠত...
আজ মনে হচ্ছে এসব কিংবদন্তির কথা!

প্রিয় মানুষের মুখগুলো দূরে দূরে–কতদিন দেখি না। আর কতদিন নির্জীবিত থাকবে আমার এই কোলাহলমুখর শহর!আইইডিসিআর এর রিপোর্ট শুনে শুনে চোখ-কান ক্লান্ত। হাত ধুয়ে ধুয়ে হাতের রেখা বিলুপ্ত। মানুষ ঝিমায়। বাড়িঘর ঘুমায়।
এখন শুধু মাঝে মাঝে শহর জেগে ওঠে অ্যাম্বুলেন্স আর ত্রাণ ট্রাকের ত্রাহি চিৎকারে।

কিসিং গোরামি এবং মঞ্চনাটকে অভিনয়

।।চয়ন খায়রুল হাবিব।।

'ডৌল, জুলেখার জেরা পর্ব' নাটকে জুলেখা চরিত্রে পারভিন পারু।

'কিসিং গোরামি' কবিতাটা লিখেছিলাম কয়েক যুগ আগে।'ডৌল, জুলেখার জেরা পর্ব' নাটকে কবিতাটা ব্যাবহার করেছিলাম জুলেখার মনোগত সংলাপ হিশাবে।নাটকে ডিজাইনার ছিলো জুনাইদ ইউসুফ, অভিনয়েও ছিলো।পারভিন পারু ছিলো জুলেখা, আর শিশির রহমান সূত্রধর।

বদল

 ।।অমিতাভ পাল।।

ছুটি কাটিয়ে বাসায় ঢুকবার মুখেই হোঁচট খেলো লোকটা। এটা কোন বেতরিপদ ইটের সাথে পায়ের ধাক্কা লেগে হোঁচট খাওয়া না, বরং কোলাপসিবল গেইটের তালা খুলতে গিয়ে খুলতে না পারার বিড়ম্বনা। তালাটা অবশ্য মাঝেমাঝে খুলতে চায় না, বেগড়বাই করে, কিন্তু একটু কায়দা করে চাবির কানে মোচড় দিলে খুলে ফেলে নিজেকে। আজও সেরকমই কিছু হয়েছে ভেবে লোকটা সেই চেষ্টায় মন দিল, চাবিটাকে বিভিন্নভাবে তালার ফোঁকড়ে ঢুকিয়ে যৌনতার নতুন নতুন কায়দার মতো তালার অর্গাজম ঘটাতে চাইলো। কিন্তু কোন চেষ্টাই কোন কাজে এলো না। তালাটা ঠোঁট টিপে অনড় হয়ে লম্বা পথ পাড়ি দিয়ে আসা লোকটার ক্লান্ত শরীরটাকে বিদ্রুপ করতে থাকলো সমানে।

চন্দ্রকণা স্মরণ

।।বাবলী হক।। সুমী সিকানদার।।

চন্দ্রকণা, তৈয়বা সুলতানা কণা

কয়েক লাইন লিখে, নীচে ছোটো করে লিখত, –চন্দ্রকণা। "মানসিক সুখে ধ্যান দিবে মানুষ। বিশুদ্ধ মানব জাতির জন্ম নিবে এই গ্রহে।"..... চন্দ্রকণা, তৈয়বা সুলতানা কণা, আমার বোনের মেয়ে ব্রেইন স্ট্রোকে চলে গেল ৪ই এপ্রিল ২০২০।

নেগ্রিচ্যুড বা নিগ্রো-চৈতন্য!

 ।।তৃণা রাব্বানি।।

বাংলাদেশে একটা পক্ষ আছে চেতনা শব্দটিকে এলার্জিতে পরিণত করতে আদাপানি খেয়ে লেগে আছে, যার লক্ষ্য হচ্ছে স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ প্রবর্তনাগুলোকে বিতর্কিত করে তুলে বাঙ্গালির নিষ্পত্তি হওয়া পরিচয়কে

বুদ্ধিবৃত্তিক সঙ্কটে ফেলে করে খাওয়া।সে বিতর্কে আমি নিরপেক্ষ নই, আমি মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের লোক।আজকের লেখাটিতে চেতনা শব্দটি উপপাদ্য হলেও, সম্পাদ্য বিষয় হলো নেগ্রিচ্যুড শব্দটি।শব্দটির ভেতর অবশ্য স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, চেতনা মিলেমিশে আছে।কে বা কাহারা শব্দটিকে 'নিগ্রোবাদ' লিখছে, তা জানার আগে 'নেগ্রিচ্যুড' শব্দটির কারা, কেনো ব্যাবহার করেছিলো, তা দেখা যাক।

অন্যরকম ঈদ। ২০২০।

।।বাবলী হক।।

উর্দু রোডের বাসায় ভাই বোনদের সাথে বাবলী হক, ষাটের দশক।

"ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ।"
এবার ঈদ এলো কিন্তু খুশি এলো না। এলো ভয়, আতঙ্ক, আশঙ্কা, লক ডাউন, দুঃসংবাদ আর কষ্ট। এই ব্যাতিক্রমী ঈদে করোনা ভাইরাসের সতর্কতায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে গিয়ে আপনজনদের কাছ থেকে আজ কতটা দিন দূরে সরে আছি!

Thursday, November 19, 2020

লুইস সেপুল্ভেদার বিদায়

।।চয়ন খায়রুল হাবিব।।

কারমেন ইয়ানেজ, লুইস সেপুলভেদা ৭০দশকে।

 
স্প্যানিশভাষি খ্যাতিমান চিলিয়ান লেখক লুইস সেপুল্ভেদা, এ-সপ্তাহের ১৬ এপ্রিল,২০২০ স্পেনের আস্তু্রিয়াস প্রদেশে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা যান।বয়স হয়েছিলো ৭০।চিলির কবি ও সেপুল্ভেদার স্ত্রি, ৬৮ বছরের  কারমেন ইয়ানেজ এ -উপলক্ষে একটি বিদায়ি কবিতা পরদিন স্থানিয় খবরের কাগজে প্রকাশ করেন।কারমেন ও লুইস দুবার একে অপরকে বিয়ে করেন, প্রথমবার ১৯৭১সালে চিলিতে, দ্বিতিয়বার স্পেনে ২০০৪ সালে।মাঝখানে কুড়ি বছর দুজনের দেখা হয় নাই।

রিলকের প্যান্থার

।।স্বরুপ সোহরাওয়ার্দী।।


একের পর এক শিক পেরিয়ে তাঁর দৃষ্টি,
এতটা ক্লান্ত যে ধরে রাখতে পারে না
আর কিছু।মনে হয় ওখানে এক হাজার শিক
এবং শিকগুলোর পেছনে কোনো বিশ্ব নেই।

একফ্রাসটিক কবিতা

।।খায়রুল আলম চৌধুরী।।



সাধারণত ছবি দেখে কবিতা লেখার ধারণাই একফ্রাসটিক সাহিত্য  হিসাবে পরিচিত। তবে ব্যাপক অর্থে, যে-কোনো মাধ্যমের শিল্প থেকে অন্য মাধ্যমে শিল্প রচনাকেও একফ্রাসটিক শিল্প হিসাবে গণ্য করা হয়। ছবিপ্রাণীত কবিতার্চ্চার ধারা আমাদের এখানে এখনো সুপরিচিত না হলেও, পশ্চিমে এ ধারাটি এখন যথেষ্ট জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। এ প্রসঙ্গে আমাদের গাজির পটের গানকে একফ্রাসটিক শিল্পের প্রাচীন এবং দেশিয় ধারা হিসাবে মনে করা যেতে পারে।

ঝিনুক ও সমুদ্রের গান।নভেলা সিরিজ।

।। ফারহিন চৌধুরী।।

পর্ব: ১০

🍀
সমুদ্রের পাড়ে ম্যাট বিছিয়ে সূর্য স্নানে ব্যস্ত মিলান ও ওল্যাণ্ড। রঙিন রোদচশমাটা আর সঙের মতো টুপিটা পরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ঘুমোনোর ভান করছে মিলান।স্ট্রবেরী মিল্কশেকটা স্ট্র দিয়ে খেতে খেতে বিলাসিতার সমুদ্রে সাঁতার কাটছে দুজন।ক্যাফের জানালাটা দিয়ে এক কাপ গরম লেবুর চা খেতে খেতে সমুদ্রের নীরবতা উপলব্ধি করছে আমির।নারিকেল গাছের পাতা আর কাঠি দিয়ে চশমা বানাল সে আর সেটি চোখে লাগিয়ে চেয়ারে হেলান দিয়ে শুয়ে পড়েছে।

পহেলা এপ্রিলে লবডঙ্কা

।।চয়ন খায়রুল হাবিব।।

চয়ন খায়রুল হাবিব, কঙ্কন নাতাশা হাবিব ও জুই।২০১৯।ঢাকা।


কঙ্কন আমার জমজ বোন
আমার নাম চয়ন
কঙ্কন, জুই আর দিদি থাকে ঢাকার উত্তরা
আমি থাকি ফ্রান্সের ব্রিটানি
আম্মা এবং আরো অনেকে আমাদের ডাকতো চয়াকঙ্কা
২০২০ পহেলা এপ্রিলে করোনা দেখাচ্ছে আমাদের লবডঙ্কা

সিরিয় কবি নিজার কাবানির দুটি কবিতা

।।খায়রুল আলম চৌধুরী।।

নিজার কাবানি

নিজার কাবানির (১৯২৩-১৯৯৮) জন্ম দামেস্কে। আরব বিশ্বে সুপরিচিত এই কবির পঞ্চাশটিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ রয়েছে। পেশায়কুটনীতিক এই কবি জীবদ্দশায় অসংখ্য সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছিলেন। তাঁর কবিতা এ যাবত পৃথিবীর প্রায় সব উল্লেখযোগ্যভাষায় অনুদিত হয়েছে।কবির On Entering The Sea কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতাগুলো অনুবাদ করেছি।

ঝিনুক ও সমুদ্রের গান।নভেলা সিরিজ।

।।ফারহিন চৌধুরী।।


পর্ব: ৯

🍀
হাফ প্যান্ট আর হাফ হাতা লাল শার্ট পরে ছোট সাহেবের মতো তৈরি হয়ে আছে মিলান।সাথে মাথায় একটা হাস্যকর বিচ হ্যাট যার একটি কোণায় কিছু ঝিনুক ঝুলছে।বলতে অপেক্ষা রাখে না যে ঝিনুকগুলো আজ সকালেই মিলান বায়না করে আমিরের কাছ থেকে নিয়েছে এবং ক্যাফেতে বসেই টুপিটিতে মনের মাধুর্যের সাথে গোলাপ ফুলগুলোর পাপড়ি দিয়ে লাগিয়েছে।আমিরের মনটা পুরো জয় করে ফেলেছে এই বালক।এই অল্প পরিচয়তেই ফ্রি ড্রিংক্স অফার করে বসে আছে।

স্প্রাইট (SPRITE): বজ্রপাতের আরেক বিস্ময়কর রূপ

।।লুৎফর রহমান বাবু।।


বজ্রপাত! এই শব্দটির সাথে আমরা প্রায় সবাই পরিচিত। কিন্তু বজ্রপাতেরও যে প্রকারভেদ আছে আমরা অনেকেই তা জানি না। এরকম এক বজ্রপাত আছে যা Sprite Lightning বা Red Sprite বা শুধু Sprite নামে পরিচিত। SPRITE-এর পরিপূর্ণ রূপ হলো Stratospheric Perturbations Resulting from Intense Thunderstorm Electrification।

যুথিকার গল্প

।।আতিয়ান নাহার।।


ট্রেন প্রায় আড়াই ঘন্টা লেট। উঠে বসেছে যুথিকা, তখনো ছাড়েনি। পাশের যাত্রীর ফোন বেজে উঠলো, উনি বলছেন "জ্বী ভাই এখনি ছাড়বে...."। যুথিকার দুচোখ ঝাপসা হয়ে এল। একদিন ছিল যখন বাড়ী রওনা হবার আগে থেকে আব্বার ফোন আসতো? রওনা হইসো, গাড়ি ছাড়সে, এখন কোথায়? কোন অসুবিধা নাইতো? এ্যারিস্ট্রোক্র্যাট পৌছাইসো? আর কতদুর? ক্যাডেট কলেজ পার হইসো? টাউনে ঢুকসো? খুব বিরক্ত লাগতো। তারপর পৌছে দেখতো দোতলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছেন পথের দিকে তাকিয়ে।

Wednesday, November 18, 2020

ঝিনু্ক ও সমুদ্রের গান।নভেলা সিরিজ।

।।ফারহিন চৌধুরী।।

পর্ব: ৭ 🍀
রিসিভারটা রাখতেই রমলা সেনের গলা দিয়ে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কান্নার আওয়াজে ক্যাফের চারপাশ ভারি হয়ে উঠল। ওল্যাণ্ড আর মিলান বেশ স্বাচ্ছন্দে ক্রেপের সাথে কানে হেডফোন লাগিয়ে রক মিউজিক শুনছিল। মাঝে মাঝে আমির আর মাজেদের কাঁধে হাত দিয়ে হো হো করে হেসে বিড়বিড় করে আবার কাঁটাচামচ দিয়ে ক্রেপটাকে এপিঠ ওপিঠ উল্টে খাচ্ছে।অন্যদিকে আমির আর নিমাই ধনে পাতার ভর্তা দিয়ে বেজায় সস বানিয়ে ক্রেপ খাচ্ছে।মিলান টমেটো কেচআপ আর কোকোয়া পাউডার গরম পানিতে গলিয়ে ব্রাউনির মতো বানিয়ে ডেসার্ট হিসেবে কাজ চালিয়ে নিচ্ছে।নিজেকে ইনভেন্টর মনে করে।

পাপিয়ার ছবি ও কবিতা

।।দিলরুবা পাপিয়া।।


 আটপৌরে দিন

রাস্তার দিকের আড়াই ফিট বারান্দা,
নিংড়ানো তোয়ালে, অর্কিডের চুঁইচুঁই পানি,
প্রথম সূর্যের স্নিগ্ধ আলো,
অষ্টাদশী কন্যার উঁকিঝুঁকি আর
অফিসগামী ভদ্রমহিলার ছোটাছুটিতো আছেই।
প্রাণান্ত সময়।

আন সেক্সটনের তারার রাত

 ।।অনুবাদ, খায়রুল আলম চৌধুরী।।

১৮৮৯ শালে মানসিক হাসপাতালে থাকার সময় ভিনসেন্ট ভ্যান গগ Starry Night ছবিটি এঁকেছিলেন। নীল রঙয়ের প্রাধান্য বিস্তার করা ছবিটিতে পাহাড় এসে মিশেছে আকাশের সাথে। বাদামি, ধূসর আর আর নীলে আঁকা বাড়িগুলো রয়েছে ছবিটির অধোভাগে। প্রতিটি বাড়ি স্পষ্ট কালো রূপরেখায় আঁকার পরও হলুদ আর শাদায় আঁকা তারা আর চাঁদ রাতের আকাশে তীব্রভাবে দীপ্যমান। তুলির প্রতিটি আঁচড়ে তীব্র গতির ছাপ স্পষ্ট। সাইপ্রাস গাছটিও যেন এই প্রবল গতির সাথে তুমুলভাবে আন্দোলিত। অন্যদিকে শহরটি যেন স্থির দাঁড়িয়ে আছে পাহাড়ের পাদদেশে, অনেকটা গুরুত্বহীন। ভ্যান গগের এ চিত্রকর্মটি তাঁর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে বিবেচিত। ছবিটি নিয়ে ১৯৬১ শালে কবিতা লিখেছেন আরেক বিখ্যাত কবি অ্যান স্যাক্সটন (Anne Sexton)। এখানে আমি কবিতাটি তরজমা করেছি।

লৌহজং-এর স্মৃতি দিঘলীর কথা

।।কামাল আহমেদ।।

"দিঘলী বাজার'' (আমার শৈশবে আঁকা ছবি)
সাদা--কালো জল রং, মাপ- ৬"x৪", সন- ১৯৮৩।
ছবির-- বাঁমদিক দক্ষিণ, ডানদিক উত্তর; নিচের দিক পূর্ব, উপরের দিক পশ্চিম! দক্ষিণে- পদ্মা নদী, উত্তর ধারটা ঐতিহাসিক গান্ধীর মাঠ নামে "বল খেলার মাঠ!''

চায়ের লিকার-আমার মাধ্যম

।।টুটুল আহমেদ।।


ছোটবেলার কাপড়ে দাগ। দাগগুলো কথা বলে। প্রত্যেকটা দাগ, কিছু না কিছু বলে। পেস্টের ফিকে সবুজ দাগ, চায়ের খয়েরী দাগ, কলমের কালো নীল কালি দাগ প্রতিটা দাগের মধ্যে এক-একটা মানচিত্র লুকিয়ে আছে।
না বলা কথার মানচিত্র…

মান্দিতে লিখি? মনিপুরীতে লিখি? গোরখপুরিতে লিখি?দলিত ভাষাতে লিখি?

।।লুবনা ইয়াসমিন।।

চলেশ রিসিল

বাংলাতে তারিখ লিখতে বলছেন!

মান্দিতে লিখি? মনিপুরীতে লিখি? গোরখপুরিতে লিখি?দলিত ভাষাতে লিখি?

মেরি অলিভার ও রে হানসেলের কবিতা

।।অনুবাদ, খায়রুল আলম চৌধুরী।।

মেরি অলিভার

মেরি অলিভারের ‘বুনো কপোত’ (Wild Geese) কবিতাটা পড়ে আমি কিছুদিন আর অন্যকিছু পড়তে পারি নাই। সে অনেকদিন আগের কথা হলেও এই কবিতাটার আবেশ আমার কাটে নাই এখনো। আমাদের পরাজয় আছে, গ্লানিও থাকতে পারে। কিন্তু তাই বলে জীবন থমকে দাঁড়াবে না, জীবন চলবে বুনো কপোতের মতো স্বচ্ছন্দে, আনন্দে।

বিদ্যুত দানব এবং আগুনের মাতাল

।।তৃণা রাব্বানি।।


আপা, দুলাভাই আপনারা দুজন সত্যিই বিদ্যুৎ খেতে খেতে মাতাল।

আপনারা আতশবাজি, আগুনের বিশেষজ্ঞ।

আপনারা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যাদুকর।

আমরা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র সম্পর্কে রূপকথা।

ঝিনু্ক ও সমুদ্রের গান।নভেলা সিরিজ।

।।ফারহিন চৌধুরী।।



পর্ব : ১ 🍀
কয়েক মাস হলো মাজেদ ক্যাফেতে কাজ করছে।মুনির চাচার ক্যাফেটি বেশ জনপ্রিয় এবং বহু বছরের পুরনো।সমুদ্র সৈকতের পাড়ে কিছু স্বপ্ন আর ভালবাসা দিয়ে তৈরি এই ক্যাফে যার নাম “ঝিনুক আড্ডা”। প্রতিদিন সকাল সাতটায় মাজেদ ক্যাফেতে এসে পরিষ্কার করার কাজে লেগে যায়।দরকারি জিনিসপত্র কিনতে বাজারে চলে যায়। মুনির চাচা তার হিসাবের খাতাটা চশমাটা বার বার মুছে উল্টে উল্টে দেখে। তেমন একটা লাভ হচ্ছেনা তবে কিছু রেগুলার কাস্টমারের সঙ্গ তার বেশ ভালো লাগে।চাচার বয়স প্রায় সত্তরের কাছাকাছি।ছোট্ট ছেলে আমির তার ক্যাফেতে মাজেদের সাথে কাস্টমারদের এট্যান্ড করে।তবে আমিরের ঘুম ভাঙে বেশ বেলা করে।

করোনা ভাইরাস ও সুদের হার

।।খায়রুল আলম চৌধুরী।।


গাড়ির চাকা নষ্ট হয়ে গেছে। বদলাতে হবে। বসন্তের শেষ দুপুর। বেলা পড়ে এসেছে। বিকাল জুড়ে ছড়িয়ে আছে মরা রোদ। রাস্তার পাশেই টায়ারের দোকান। মহাজনের বয়স পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে।শশ্রুমন্ডিত হাসিমাখা চেহারা। দেখলে মনে হয় কত দিনের পরিচিত! দেখার সাথে সাথেই আমাকে যত্ন করে বসতে দিলেন।

মাস্ক, সাবান, সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং, লকডাউন

।।অমিতাভ পাল।।

করোনা মহামারী আমাকে নাজেহাল করে ফেলেছে।

যখন মহামারী ছড়িয়ে পড়ার খবরটা প্রথম শোনা গিয়েছিল, টেলিভিশনে পত্রপত্রিকায় যখন একটু একটু করে মুখ দেখাচ্ছিল ভাইরাসটা, ব্যাটা বেশ দূরে আছে ভেবে খুব একটা দুঃশ্চিন্তায় ছিলাম না। তারপর যখন একদিন শুনলাম ভাইরাসটা ঢুকে পড়েছে আমাদের দেশেও, পত্রপত্রিকা টেলিভিশনে হাজির হচ্ছেন কপালে ভাঁজ ফেলা চিন্তাক্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা- একটু আদটু চিন্তা ঢুকলো আমার মনেও।