।।তৃণা রাব্বানি।।
পত্নী বিয়োগের পরক্ষণে তুমি ভাষার গোলমালে পড়লে, গোলমাল তোমার বহুপত্নীক ভাষা হয়ে গেলো।খুন করে পুলিশের কাছে গেলে।তোমার চেয়ে বড় একটা গোলাপি বড়ি তোমাকে বল্লো, ডাক্তার শাহীন, নার্স জাকির, রোগী আনিসুল, স্বাস্থ্যকর্মী কাজলকে এক ঢোকে গিলে হেগে বের করে দাও।তুমি আমাকে বললে, 'আমার যে অংশে পক্ষাঘাত সেখান দিয়ে শুরু করো।'
বসার ঘরের চারপাশের দেয়াল শক্ত শক্ত চাপে, সঙ্কুচিত হচ্ছে।দামি ফার্নিচারগুলোকে মনে হচ্ছে ক্যামেরার লেন্সে ক্লোস শটে ঘেঁটে খুব কাছাকাছি নিজের উলঙ্গ প্রতিবন্ধী লোমকূপ।সমস্তই ঘটছে পাঁচ ছয়বার করে, আমার সামনে ছয় ফুটের চেয়ে লম্বা অনেকগুলো ফায়ারম্যান কফি-টেবিলটার সাথে কি করা যায়, কি করা যায় করতে করতে, প্যারামেডিক মেঝেতে উপুড় হয়ে পড়ে থাকা আমার পত্নীকে চিত করলো, একজন তার ব্লাউজ ছিঁড়ে হৃৎস্পন্দন খুঁজছে, অন্য একজন তার বুকে উপরের দিকে চেপে ধরে বলছে, 'এত টাইট ব্রা এই বয়সে'।একজন মহিলা একটা কালো ব্যাগ খুলছে এবং আমার পত্নীর গলাতে একটি টিউব প্রবেশ করালো, হাইপারস্পিডে ঘটে যাওয়া সবকিছুর কাছে গিয়ে দেখি, ড্রইং রুম পুরানো ছবি হিসাবে ধূসর এবং দানাদার হয়ে যাচ্ছে পত্নীর ফ্যাকাশে মুখে।
আমি কি স্পেস স্টেশানে ল্যান্ড করেছি?সময় ট্র্যাক করা অসম্ভব, বসার ঘরে ২০ ফুট দূরে দেখতে পাচ্ছি মারাত্মক ভুল ভাবে আমার পত্নী, পালঙ্কের দিকে ইশারা করে, মুখ খোলা, কিন্তু কথা বলতে অক্ষম, তার চোখ বড় এবং আতঙ্কগ্রস্ত, আমি তার দিকে ছুটে গেলাম, সে আমার হাত ধরলো, আমি তাকে আমার কাছে টানলাম এবং নির্লিপ্তভাবে তিনটি সহজ সংখ্যায় ঘুষি দেওয়ার চেষ্টা করে, ফোন করার চেষ্টা করেছি কিন্তু পারছি না।ধমক একজনকে নাম ধরে ডাকলো, এগুলি ঠিক করুন।আমার পত্নী শ্বাস নিতে নিতে হাঁপায় এবং আমি বার বার বলি, "মধু, অনেক শ্বাস নিয়েছো।''ফোনে স্বাচ্ছন্দ্য এবং যুক্তিযুক্ত শব্দ করার চেষ্টার সাথে পত্নীকে বললাম "আর নিঃশ্বাস নেবার দরকার আছে কি?" অন্য প্রান্তের ফোনে মহিলাটি শান্তভাবে কথা বলছে।এটি কীভাবে সম্ভব?আমার নাম এবং ঠিকানা জিজ্ঞাসা করছে।
আমি এখন চিৎকার করছি, "তাড়াতাড়ি! অনুগ্রহ!" কয়েক মিনিট পরে - আমি মনে করি এটি কয়েক মিনিট, সময় ফুলে উঠে মানে সময় মোটা হতে হতে ফেটে পড়ছে।ফায়ারম্যান এবং প্যারামেডিক ঘটনাস্থল থেকে কফির টেবিলটাকে এগারো তালার জানালার বাইরে ছুড়ে ফেলে দেয় এবং আমার স্ত্রীকে মেঝেতে নিয়ে যায় এবং তার ব্লাউজটি ছিঁড়ে দেয়,ঘরের দেয়ালগুলো মনোযোগ দিয়ে আমার বিপত্নীক হওয়া দেখছে।
দেয়ালগুলো ভাংছি।দেয়ালগুলো ভাংতে পক্ষাঘাত ঘটিয়েছি।
তৃণা রাব্বানি
৬/১১/২০
নিউজিল্যান্ড
কভার পেন ড্রয়িং, ইকবাল আহমেদ।'জুলেখা সিরাপ' ফেসবুক গ্রুপে শিল্পী ইকবাল আহমেদের পোস্ট থেকে প্রাপ্ত।
