।।হাসনাত আবদুল হাই।।রাফী হক।।
শুভ জন্মদিন
মুর্তজা বশীর আমাদের আধুনিক চিত্রকলার পথিকৃৎ শিল্পী । আজ তিনি ৮৭ বছর পূর্ণ করে ৮৮ তে পা দিলেন।
স্যার একটি ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, তিনি পিকাসোর থেকে একদিন বেশি বাঁচতে চান । বিশ্বখ্যাত শিল্পী পাবলো পিকাসো বেঁচেছিলেন প্রায় ৯০ বছর । প্রার্থনা করি বশীর স্যারের অর্ন্তইচ্ছা পুরণ হোক । পরমেশ্বর স্যারকে শত বছরেরও বেশি আয়ু দিন এই দোয়া করি ।
গত বছর জন্মদিনের দুদিন আগে স্যার বলেছিলেন 'রফি, তুমি আমার জন্মদিনে কী করবে ?'
স্যার, আপনার জন্মদিন আনন্দময় হোক । আপনি শিল্পীদের ভালোবাসায় সিক্ত হোন । আমাদের মধ্যে আরও একশ বছর থাকুন ।
রাফী হক
১৭/০৮/১৯
ঢাকা
বিদায়
এই ত ক'দিন আগে, তিনি ফোন করে জানিয়েছিলেন নিজের অক্সিজেন নেয়ার যন্ত্র খারাপ হয়ে যাওয়ায় নতুন যন্ত্র কি ভাবে কিনবেন, এটা নিয়ে যখন চিন্তিত তখন একজন তঁাকে পরামর্শ দিয়েছিল কতৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে।তিনি কারো কাছে হাত পাতবেন না,এই নীতিতে অটল থেকে সাহায্যের জন্য আবেদন করেন নি।এর কদিন পর কবি তারেক সুজাত তার দুটি ছবি কিনে নিলে সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।তিনি হেসে বলেছিলেন,আল্লাহ আমার সহায়।স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি খুব আধ্যাত্মিক হয়ে গিয়েছিলেন। প্রতি শুক্রবার বনানী গোরস্তানে বড় মেয়ে যুঁইকে নিয়ে যেতেন স্ত্রীর কবর জিয়ারতের জন্য।আজ থেকে তিনি সেখানেই চিরদিনের জিন্য শুয়ে থাকবেন।
মুর্তজা বশিরের সঙ্গে অনেকদিন কাটিয়েছি।তার সঙ্গ সব সময়ই ছিল উদ্দীপক, কেননা তিনি যেমন ছিলেন আবেগী, সমভাবে বুদ্ধিমান।সেই সব স্মৃতি নিয়ে আমার বাকি জীবন কাটবে।তার সব সময় একটা চিন্তা ছিল মৃত্যুর পর তাকে কেউ মনে রাখবে কি না। আমার ত মনে হয় তার মত একজন জেদী,অহঅংকারী এবং আত্মমর্যাদা সম্পন্ন মানুষকে ভোলা সম্ভব না।তার জীবন ও শিল্প নিয়ে আমি শিল্পকলা একাডেমির জন্য যে বই লিখেছি সেখানে বলেছি তিনি পিকাসোর মত ক্রমাগত বাঁক বদলেছেন যার জন্য তিনি কখনোই পুরনো হবেন না।যারা অমর হয়েছেন কাজের মাধ্যমেই হয়েছেন। সময়ই বলবে তার কাজ কালজয়ী কিনা।
হাসনাত আবদুল হাই
১৫/০৮/২০
ঢাকা