ফ্রান্সে প্রকাশিত বাংলা ওয়েবজিন। প্রকাশক : প্যাট্রিসিয়া গিদাস, ভ্যান, ৫৬০০০, ব্রিটানি, ফ্রান্স। সম্পাদক : নাসরিন-জয়া হক, চয়ন খায়রুল হাবিব। Contact : choygypsy@yahoo.com

Friday, April 16, 2021

কবি আবিদ আজাদ ও ঘাসের দুর্ঘটনা!

 ।।স্বরুপ সোহরাওয়ার্দী।।

প্রথম কবিতা সংগ্রহে যে লেখক নিজের কাব্য ভাষা বা সিগনেচার টিউন তৈরি করে ফেলতে পারেন এবং আগের ধারা থেকে বেরিয়ে নিজের স্বাতন্ত্র্য দৃষ্টিকোণ সংহত করতে পারেন তাকে আমরা বলবো মেজর পোয়েট। একটা সময়ে বেশ কয়েকজন মেজর পোয়েট থাকতে পারে আগের পরের দশক মিলিয়ে। আবিদ আজাদ নিঃসন্দেহে মেজর পোয়েট। যে শর্তগুলোর কথা লিখেছি তার প্রথম কবিতা সংগ্রহ 'ঘাসের ঘটনা'য় তা তিনি অর্জন করেছিলেন।ক্যানন বা ক্যানোনিকাল তখন বলা যাবে, তখন যখন একজনের ভঙ্গিকে পরে অনুসরণ করা হয়, অনুসরণ করেও পরের জন নিজের স্বাতন্ত্র্য অর্জন করতে পারেন।

আবার কখনো কোনো কোনো দশকের উল্লম্ফন এতো শক্তিশালী যে তাতে অনুসরণের ধারাবাহিকতা থাকে না, সেই দশক কয়েকটা ক্যানোনিকাল ধারা তৈরি করতে পারে। বাংলা কবিতার এ ধরনের দশক বলা যাবে ৩০, ৫০ এবং ৮০কে। জীবনানন্দে নিমগ্ন বা এরেস্টেড থাকবার পরও বিনয় মজুমদার নিজের সিগনেচার টিউন তৈরি করেছিলেন বা অক্ষরবৃত্তের গাণিতিক ছন্দকে চিন্তার উপস্থাপনায় আরো খুলতে পেরেছিলেন, জীবনানন্দকে কাঠামোতে ধরে রেখে জীবনানন্দের প্রতীকী জটিলতাকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিলেন। ৫০ শে শামসুর রাহমান, শহীদ কাদরী হ্যাঁচকা টানে ৩০ থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন।এর পর আরেকটা হ্যাঁচকা টান এসেছে আশির দশকে, যখন আমরা পেলাম কাজল শাহনেওয়াজের 'খোলামিল', চয়ন খায়রুল হাবিবের 'ভাঙ্গা লিরিক, ভাঙ্গা বয়ান'।৫০ থেকে ৮০, ৩০ বছরে আবুল হাসান, নির্গুণ, রফিক আজাদ, আবদুল মান্নান সৈয়দের মতো শক্তিশালী কবিরা এসেছে, বিষয়ের দিক থেকে এদের সবার কিছুটা স্বাতন্ত্র্য থাকলেও কারো ভেতর সেই হ্যাঁচকা টানটুকু নেই, এরা গদ্য ছন্দের লিরিকাল জায়গাতে এবং শব্দের ব্যাবহারে কখনো রাবীন্দ্রিক, কখনো তিরিশিও, কখনো পঞ্চাশিও।

আশিতে কাজল, চয়নের ডিকশান নিয়ে ভালো কাজ করেছে রিফাত চৌধুরী, আবার তাদের অনেক সতীর্থ ক্রল করে আগুপিছু করেছে। কখনো পেছাতে পেছাতে ৫০শে গেছে, কখনো ৩০শে।এখানে আবিদ আজাদের 'ঘাসের ঘটনা' একটি মাইল ফলক আবার তার আগের কবিদের সাথে একটি যোগসূত্র।'ঘাসের ঘটনা' পুরো পড়লে এবং আশির 'জলমগ্ন পাঠশালা', 'জুলেখা সিরাপ' ধরনের মেজর সংগ্রহ পড়লে বোঝা যায় আশি কোথায় সত্তর এবং তার আগের সব দশকগুলোকে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে ভবিষ্যতমুখী হয়েছে। বিপদে পড়ে গেছে ৯০ দশক থেকে এখন অবধি বিভিন্ন দশকের কবিতা চর্চাকারিগন। এদের ভেতর একজন বা কয়েকজন কারোকে বলা যাচ্ছে না যে এরা কোনো কাব্য ভূমা তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু এদের সম্মিলনে কয়েকশ কবিতা সংগ্রহ বেরিয়েছে। আশির গতি এবং মহাকাব্যিকতা এদের কারো ভেতর নেই, ৩০ ও ৫০ ধরে এদের অনেকে সমালোচনার নামে কবিতা রিভিউর অবমূল্যায়ন করেছে, যার লক্ষ্য আশির মেজর কবিদের আড়াল করা, যেটা সাহিত্যের অপরাজনীতি, সাহিত্য নয়।
আবার ৮০কে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অনুকরণ অনেকে করতে চেয়েছে, পারে নাই, মানে জীবনানন্দে এরেস্টেড থাকবার পরও বিনয় যেভাবে স্বতন্ত্র স্বরে পৌঁছেছিল বা শামসুর রাহমানে এরেস্টেড থাকবার পরও আবুল হাসান যেভাবে স্বতন্ত্র স্বরে পৌঁছেছিল। আশির প্রধান কবিদের ভেতর এই এরেস্টেড ব্যাপারটা ছিল না, এরা উত্থানেই হেডোনিস্টিক উল্লাসে মত্ত, এরা যখন দুরান্বয়ী তখন তা দূরের হলেও মাদলের ঝংকার, এদের তাণ্ডব স্বভাবতই উল্লাসপ্রবণ, আবার এদের শব্দের ভেতর আরোপিত নীরবতা অবসাদগ্রস্ত না হয়ে জলপ্রপাতের কলরোল। এই জলপ্রপাতে পৌছাতে এদের 'ঘাসের ঘটনা' পার হতে হয়েছিল।আবিদ আজাদের প্রথম সংগ্রহটিতে সবকিছু যে খুব অরিজিনাল, তা নয়, স্তনান্তের নীলে/ চুমুকরোজ্জ্বল/ শুদ্ধললাটিকা(মেঘদের কামসূত্র/ঘাসের ঘটনা) জাতীয় পিছুটানগুলো তার তখনো এবং সবসময়েই ছিল। পিছুটানগুলোকে খেলিয়ে নিজের স্বরে পৌছাতে তিনি কাব্যিক শ্লীলতার সীমাসরহদ্দ পার হয়েছেন এভাবে,
‘বাস্তবের রংবাজি আর গোয়ামারা খেতে-খেতে
আমাদের মতো শুধু-শুধু বেঁচে থেকে দেখে যাক
গোধূলির রাঙা-মৃত্যু, দেখে যাক উজ্জ্বল যন্ত্রণা’,
[গোধূলির হত্যাকাণ্ডে প্রতিদ্বন্দ্বীদের সংলাপ/
ঘাসের ঘটনা)

কাব্যিক শ্লীলতার সীমাসরহদ্দ ডিঙ্গাতে গিয়েও আবিদ আজাদ অক্ষরবৃত্তের শৃঙ্খলায় সমর্পিত বা এরেস্টেড থেকেছেন। এখানেই ৯০ এবং তার পরের কবিদের তাকে অনুসরণ সহজ হয়েছে। আশির হাতে গোনা কয়েকজন ৩০, ৫০, ৬০, ৭০ থেকে পৃথক, এরা কাব্যিক শব্দের প্রতি সম্মোহিত না থেকে পথের ছুড়ে ফেলা, মলিন, নৈমিত্তিক শব্দকে জেটে ধোয়া উজ্জ্বলতা দিতে পেরেছে এবং অক্ষরবৃত্ত ছাড়াই কবিতাকে আরো বিচিত্র বিশ্বায়িত ছন্দসূত্রে খেলাতে পেরেছে, এমন কি চোদ্দপদিকেও বের করে আনতে পেরেছে মিত্রাক্ষর ও অক্ষরবৃত্ত থেকে। এদের ছন্দসূত্রে পৌছাতে হলে একটা বিপুল অরকেস্ট্রার অনেকগুলো বাদ্যযন্ত্রের ঐকতানকে আয়ত্তে আনার দরকার। ৯০ এর পরের কবিতা চর্চাকারিরা এখানেই আশিকে পাশ কাটিয়ে ৭০এর আবিদ আজাদকে ধরে আরো পেছনে গেছে এই কাব্যিকতার মোহে।মজার ব্যাপার যারা হৈছে, খাইছে এবং খিস্তি ব্যাবহার করেছে ৯০ এর পর, তাদের ভেতরেও এই কাব্যিক শব্দের প্রতি মোহ দেখা যাচ্ছে, মোহ যত বেশি কথিত অপ্রমিতের আড়াল বা মেথোডোন নেবার প্রবণতা তত বেশি।

চয়ন খায়রুল হাবিব সর্বশেষ গদ্যে লিখেছেন, ''বাংলা ভাষার সাব ডিসিপ্লিনে সর্বকালের হোমপেজ করতে বলা হলে প্রথমে আনতাম চন্দ্রাবতীকে, তার পর মাইকেল মধুসূদন, মহাশ্বেতা দেবী, তসলিমা নাসরিন, আবিদ আজাদ ও মুস্তফা আনোয়ারকে।হোমপেজে চরিত্রদের ভেতর রাখতাম শর্মিষ্ঠা, কাদম্বরী, চন্দ্রমুখী ও আমার জুলেখাকে। রবীন্দ্রনাথ, জীবনানন্দের ভক্তরা হৈ হৈ করে উঠতো।আবার বিশ্ব হোমপেজ করতে দেয়া হলে হোমার, শাপো, বাল্মীকির পাঁশে রবীন্দ্রনাথকে রাখতাম প্রথম ৫ জনে।'' গদ্যটির বিষয় হলো, ১২ মিলিওন ফাইলের সাম্প্রতিক এক সাহিত্য হোমপেজে প্রয়াত মার্কিন উপন্যাসিক ফিলিপ রথের শেকস্পিয়ার স্যামুয়েল বেকেটের সারিতে আসা নিয়ে।ফিলিপ নোবেল পায় নাই এবং তা নিয়ে তার আক্ষেপ ছিল। চয়ন এ প্রসঙ্গে আবিদ আজাদ, মুস্তফা আনোয়ারের বাংলাদেশের কোনো জাতীয় পদক না পাবার উল্লেখ করে গদ্যটি শেষ করেছেন, ''একজন ফিলিপ রথ নোবেল জয়ী হওয়া ছাড়াও শেকসপিয়ারের পরে ক্যানোনিকাল স্থান পেয়ে যেতে পারে, পেয়েছে।যেরকম রবীন্দ্রনাথের পরে, মুস্তফা আনোয়ার, আবিদ আজাদ ও তসলিমা নাসরিনকে আমি ক্যানোনিকাল মর্যাদা দেই! এই তুলনামূলক গুনগত নবায়ন জাতীয় বা আন্তর্জাতিক পদকের সীমা ছাড়িয়ে যায়।'' https://www.facebook.com/.../permalink/4161949587173347/

ক্যানোনিকালের একটি ব্যাপার হচ্ছে অনুসরণ এবং যে করে তার সৎ তুলনামূলক আলোচনা। বাংলা সাহিত্যে এটা ঢেকে রাখা হয়।সৈয়দ শামসুল হক শামসুর রাহমানের 'নিঃসঙ্গ শেরপা'র রিভিউর নাম দিয়েছিলেন, 'শেরপা নিঃসঙ্গ নয়'।নির্মলেন্দু গুন একের একের পর এক গদ্যে আবুল হাসান ও তার কবিতা নিয়ে বলেছেন। কিছুদিন আগে চয়ন খায়রুল হাবিব তার দশকের কবি শামসেত তাবরেজির চিত্র প্রদর্শনী উপলক্ষে একটি বিস্তারিত সম্পূরক রিভিউ করেছেন। চয়ন খায়রুলের "রেঙ্গুন সনেটগুচ্ছ' নিয়ে কাজল শাহনেওয়াজ সম্পূরক রিভিউ করেছেন। নব্বই থেকে দেখা যাচ্ছে সম্পূরক রিভিউ আর পাওয়া যাচ্ছে না, যা বলে দিচ্ছে যে আড়ালচারিতা, নান্দনিক পাইরেসি ও হীনমন্যতা অর্ডার অব দা ডে হয়ে গেছে, ঘরোয়া দলবাজি দিয়ে তা ঢাকা হচ্ছে।

আবিদ আজাদ ও সতীর্থ শিহাব সরকারের সমান্তরাল বিকাশও উল্লেখযোগ্য।যদিও জীবনের এক প্রান্তে এরা দুজন দু দিকে চলে গেছে, কিন্তু সামগ্রিকভাবে শিহাব সরকার থেকে আমরা আবিদ আজাদের কাজ নিয়ে বিস্তারিত রিভিউ আশা করতে পারতাম।শিহাব বাংলা একাডেমি পদক পেয়েছেন, আবিদ পান নাই। কিন্তু আজকে চয়ন খায়রুল আবিদ আজাদকে অনুসরণ না করেও তাকে ক্যানোনিকাল বলছে, এর কারণ আবিদের সীমাটি পার হবার যোগ্যতা ধারণের ফলে তাকে আড়ালচারিতার আশ্রয় নিতে হয় নাই। আবিদ আজাদ তার আগের দশকগুলো থেকে অক্ষরবৃত্তের ব্যাবহারে আলাদা নন, ষাটের দশকের কবিতায় যে লিরিক বিকশিত হয়েছিল তা থেকে আলাদা নন, নিসর্গপ্রিয়তায় আলাদা নন আবিদ আজাদ শুরু করেছিলেন সুমন সরকার ছদ্মনামে ছড়াকার হিশেবে। শোনা যায় আজাদ নামটি নিয়েছিলেন প্রিয় কবি রফিক আজাদের শেষ নাম থেকে। এখানেও নব্বইয়ের পরের যারা কবিতা বলতে বোঝেন পয়ার, স্বরবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত তাদের অনেকের পক্ষে সুমন সরকারের ভুডু বা অবশিষ্টের সাথে যোগাযোগ সহজ হয়ে ওঠে। কিন্তু এই সব শর্তে বিলীন না হয়ে তার ভেতর আত্মজৈবনিকতা উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে, যেখানে ব্যাক্তি কিভাবে তার একান্ত নৈসর্গিক পটভূমিকে বিদায় জানাচ্ছে, পৌঁছে যাচ্ছে আত্মগত যোগাযোগ সফল কণ্ঠস্বরে, তা পাওয়া যাবে নিচের কবিতায়,
‘স্বপ্নের ভিতর আমার জন্ম হয়েছিল
সেই প্রথম আমি যখন আসি
পথের পাশের জিগা-গাছের ডালে তখন চড়চড় করে উঠছিল রোদ
কচুর পাতার কোষের মধ্যে খণ্ড-খণ্ড রুপালি আগুন
ঘাসে-ঘাসে নিঃশব্দ চাকচিক্য-ঝরানো গুচ্ছ গুচ্ছ পিচ্ছিল আলজিভ
এইভাবে আমার রক্তপ্রহর শুরু হয়েছিল
সবাই উঁকি দিয়েছিল আমাকে দেখার জন্য
সেই আমার প্রথম আসার দিন
হিংস্রতা ছিল শুধু মানুষের হাতে,
ছিল শীত, ঠাণ্ডা পানি, বাঁশের ধারালো চিলতা, শুকনো খড়
আর অনন্ত মেঝে ফুঁড়ে গোঙানি-
আমার মা
স্বপ্নের ভিতর সেই প্রথম আমি মানুষের হাত ধরতে গিয়ে
স্তব্ধতার অর্থ জেনে ফেলেছিলাম,
মানুষকে আমার প্রান্তরের মতো মনে হয়েছিল-
যে রাহুভুক।
অন্যমনস্কভাবে আমার এই পুনর্জন্ম দেখেছিল
তিনজন বিষণ্ণ অর্জুন গাছ।
সেই থেকে আমার ভিতরে আজও আমি স্বপ্ন হয়ে আছি-
মা, স্বপ্নের ভিতর থেকে আমি জন্ম নেব কবে?’
(জন্মস্বর/‘ঘাসের ঘটনা)

'তিনজন বিষণ্ণ অর্জুন গাছ', শেকসপিয়ারের ম্যাকবেথ নাটকের তিন ডাইনিকে মনে পড়িয়ে দেয়। 'ঘাসের ঘটনা' শিরোনামটি হুইটম্যানের লিভস অব গ্রাস/Leaves Of Grass সংগ্রহটি মনে পড়িয়ে দেয় শুধু নামের দিক থেকে, হুইটম্যান তার বিবৃতিতে মহাকাব্যিক ও শব্দকে প্রতিকীভাবে ব্যাবহার না করে সরাসরি ব্যাবহার করেন। পরোক্ষ প্রতীকের ব্যাবহার আবিদ আজাদের কবিতায় বার বার এসেছে।পরবর্তীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে লেখা আপাত সরাসরি কবিতায়ও এই পরোক্ষ প্রতীকের ব্যাবহার থেকে যাবে।পাকিস্তান সময়ে এবং বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে একের পর এক সেন্সরে কবিতায় পরোক্ষ প্রতীকের প্রতি টানের কারণ বোঝা যায়। কিন্তু পশ্চিম বঙ্গে একই পরিস্থিতি না হলেও পরোক্ষ প্রতীকের বহুল ব্যাবহার লক্ষণীয়।এখানেও বাংলাদেশের আশির দশক আত্মজৈবনিক ন্যারেটিভ বা বয়ানে নান্দনিক শর্ত পূরণের পরও প্রতীকের পরোক্ষতা থেকে সরে এসেছে নাগরিক আত্মজৈবনিকতার হেঁচকা টানে।আবিদ আজাদ পরোক্ষ প্রতীক ব্যাবহার করলেও তার শব্দ ভাণ্ডার ব্যাপক এবং অন্তশ্রোতা লিরিক একই সময় কয়েকটি ধারাতে বা স্তরে খেলা করতে পারে, যার অভাবে তার অনুসরণকারীদের কবিতা বেশির ভাগ সময়ে বুদ্ধিবৃত্তিক মৈথুনের এক মাত্রিকটা পার হতে পারে নাই। আবিদ আজাদের কবিতার লিরিক গুণাবলি বুঝে উঠতে পারলে, আমরা তার পরের দশকের কবিরা কি করে 'খোলামিল' ও 'ভাঙ্গা লিরিকে' পৌঁছেছিল, তার মন্ত্রগুপ্তি বুঝতে পারবো।আক্ষরিকভাবে আশির দশক লিরিক, বয়ান, প্রচলিত ছন্দবোধ ভেঙ্গে দিয়েছিল।

আবিদ আজাদ ক্যানন তাতে সন্দেহ নেই। কোনো ক্যানন স্বয়ম্ভূ নন।আশির মেজর কবিরা এখনো সক্রিয় থাকার ফলে আবিদ আজাদের আবেদনকে ফিরে দেখার প্রয়োজন আরো বেড়েছে।

স্বরুপ সোহরাওয়ার্দী
১৭/০৩/২১

Photo : Still from the film 'The Tall Grass' adapted from same title by Stephen King.