ফ্রান্সে প্রকাশিত বাংলা ওয়েবজিন। প্রকাশক : প্যাট্রিসিয়া গিদাস, ভ্যান, ৫৬০০০, ব্রিটানি, ফ্রান্স। সম্পাদক : নাসরিন-জয়া হক, চয়ন খায়রুল হাবিব। Contact : choygypsy@yahoo.com

Friday, April 16, 2021

সত্যজিৎ রায়ের খেরোর খাতা

।।পিয়া ব্যানার্জী।।শুভেন্দু দাশমুন্সী।।ফারহানা সুফি।।নাসরিন জয়া হক।।

বাবার খেরোর খাতা

সত্যজিৎ রায় একবার আকাশবাণী কলকাতায় তাঁর একটি ইন্টারভিউতে বলেছিলেন, কিভাবে তিনি বাবাকে চিনেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, "আমার বয়স তখন আড়াই। যখন বাবা আমাকে ছেড়ে চলে যায়। আমার জন্মের পর থেকেই বাবা প্রায় অসুস্থ হতেন। আড়াই বছর বয়সে তাঁর কোনও স্মৃতি আমার মনে থাকার কথা নয়। তবুও জানি না কেন ওই বয়সের দু'টি স্মৃতি আমার আজও মনে আছে।

বাবা অসুস্থ ছিলেন বলে বাবাকে চেঞ্জে নিয়ে যাওয়া হত। একবার তাঁকে সোদপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় আমিও গিয়েছিলাম তাঁর সঙ্গে। গঙ্গা দিয়ে একটি জাহাজ যাচ্ছিল। বাবা আমায় বলেছিলেন, 'ওই দেখ স্টিমার যাচ্ছে।" এটি একটি সন্ধ্যার ঘটনা। এবং আমার স্মৃতিতে আজও রয়েছে এ ঘটনা। তবে বাবাকে আমার সেভাবে পাওয়া হয়নি কখনও। বাবার সম্পর্কে যা জেনেছি তা আত্মীয়দের থেকে এবং বাবার লেখা পড়ে।

বাবা মারা যাওয়ার পর আমি মায়ের সঙ্গে চলে আসি মামাবাড়িতে। যত বড় হয়েছি ততই বাবাকে আমার জানতে ইচ্ছে হয়েছে। তিনি কেমন ছিলেন জানতে চেয়েছি। আর বাবাকে জানার জন্য তাঁর অনেক লেখা ছিল। সেই লেখাগুলোই আমাকে বাবার কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল। বাবার একটি 'খেরোর খাতা' ছিল। অনেকটা মুদি দোকানের খাতার মতো। যার পাতা লাল। সেখানে বাবা অনেক কিছু লিখতেন। বাবার লেখা একটি বিজ্ঞাপনও আমি পাই। একটি ওষুধের বিজ্ঞাপন। ওষুধের নাম 'গন্ধ বিকট তেল।" সুকুমার রায়ের হাতের লেখা। তিনি লিখছেন, 'গন্ধ বিকট তেলের নাম শুনেছেন তো? শোনেননি ? আপনি কি কালা !' এর পর ওষুধের দাম বিবরণ এসব রয়েছে। এর থেকে বোঝা যেত তাঁর সবেতেই অসাধারণ দখল ছিল। বাবা বিদেশ থেকে অনেক চিঠি লিখেছিলেন দাদুকে। সেই চিঠি থেকেও বাবাকে জানা যায়। তিনি কখনও লিখছেন, ক্রিকেট খেলা কেমন চলছে? আবার কখনও মাকে লিখছেন আচার ছাড়া তাঁর চলবে না। কখনও বোনকে লিখছেন, তিনি টাই বাঁধা শিখে ফেলেছেন। এই সমস্ত কিছু থেকেই আমি বাবাকে চিনেছি। বাবার এত লেখা ছিল যে সেগুলো পড়লেই মনে হত বাবা আছেন। তাঁর লেখার মধ্যে দিয়েই তিনি বেঁচে ছিলেন। আমিও তাঁকে লেখার মাধ্যমেই চিনেছি। তাঁর সঙ্গে আমার তেমন পরিচয় হয়নি ঠিকই, কিন্তু এই সব খাতা, নোট বই আর চিঠি তাঁকে আমার খুব কাছে এনে দিয়েছিল।"

পিয়া ব্যানার্জি

চারুলতার খেরোর খাতা

‘নষ্টনীড়’ গল্পটা থেকে চিত্রনাট্য বানাবার আগে চার-চারবার কাহিনিটি লিখেছেন সত্যজিৎ। এই চারটি খসড়া থেকেই ক্রমশ তৈরি হয়ে উঠবে তাঁর চূড়ান্ত-চিত্রনাট্য। গল্পটাই লিখছেন তিনি, পরপর চারবার। সেই অর্থে এখানে কোনো সংলাপ নেই, নেই চিত্রনাট্যে যেভাবে দৃশ্য-বিবরণ থাকে, তার চিহ্নমাত্র। এই চারবার লেখার মধ্যে, লক্ষ করে দেখব, প্রথমবার যখন লিখছেন, তখন তাঁর পাশে আছে রবীন্দ্রনাথের গল্পটি। তারপরে তিনি সেই গল্পটিকে সাজালেন ছবির মতো করে। তৃতীয় বার মোট ন-টি সিকোয়েন্সে সংক্ষেপে ঢেলে সাজালেন গল্পটিকে আর চতুর্থবার ওই ন-টি সিকোয়েন্সকেই আরো বিস্তারিত করলেন, সেই গল্পের ধাঁচেই। এই চারটি গল্পলেখার ধরন-ধারণের প্রথম খসড়াটি পড়ে-দেখা এই হপ্তায়। 

সত্যজিৎ রায়ের এই প্রথম খসড়াটি গুরুত্বপূর্ণ তিন দিক থেকে। প্রথমত, একটি গল্প থেকে কীভাবে সত্যজিৎ বানিয়ে তোলেন তাঁর চিত্রনাট্যের গড়ন, এই লেখা যেন, তাঁর নিজের কাছে, তাঁরই এক কর্মশালা। দ্বিতীয়ত, ‘চারুলতা’ ছবির মুক্তির পর ‘পরিচয়’ পত্রিকায় তিনি যখন অরূপ রুদ্রের প্রবন্ধের উত্তরে ‘নষ্টনীড়’ গল্প আর ‘চারুলতা’র চিত্রনাট্য নিয়ে তুলনামূলক প্রবন্ধ লিখবেন এই খসড়া যেন তারই নেপথ্য-ভূমি। তৃতীয়ত, রবীন্দ্র-গল্পের মূল-কাঠামোকে ছবির প্রয়োজনে সত্যজিৎ পুরো বদলে ফেলেছিলেন বলে যাঁরা মনে করেন, তাঁদের মনে রাখতে অনুরোধ করি এই বিশেষ পর্বটি। কারণ এখান থেকেই বোঝা যাবে, পুরো গল্পটিকে বদল করার আগে কী অপরিসীম যত্নে তাকে আগে নিজের কাছে সাজিয়ে নেন একজন দক্ষ চিত্রনাট্যকার। পূর্বজের প্রতি কতখানি সশ্রদ্ধ হলে এই পথটি পেরিয়ে নিজের প্রকল্পে পা রাখেন উত্তরসূরি, এ যেন তারও এক মহান শিক্ষা।


এই খেরোর খাতার প্রথম খসড়ায় দেখা যাবে, নিশ্চয়ই সত্যজিৎ রায়ের পাশে ছিল রবীন্দ্রনাথের ‘গল্পগুচ্ছ’ বইটি। কীভাবে শুরু হচ্ছে সেই গল্পসূত্র, লক্ষণীয়: ‘ভূপতি-চারু। ভূপতি শ্যালক উমাপদর সঙ্গে ইংরিজি কাগজ চালায়। চারুর boredom--- ভূপতির realization--- ‘তোমার একজন সঙ্গী চাই’ উমাপদর স্ত্রী মন্দাকিনী এসে চারুদের বাড়ি থাকে।’ এরপরের অংশের শুরুতেই লেখা ‘অমল- চারু’। তারপরে ‘অমল থার্ড ইয়ারে পড়ে। চরুর লেখাপড়ার শখ--- অমল মাস্টারি করে। চারু-অমলের companionship। মন্দা গৃহকর্ম নিয়ে থাকে--- সে অমলের উপর অপ্রসন্ন। বাগান করার plan। বাগানে চারু-অমল। মন্দা--- ‘তোরা কী করছিস?’--- ‘আমড়া খুঁজছি।’’ এর পাশে একদিকে আড় করে লেখা, ‘অমল ভূপতির ইংরিজি প্রুফ সংশোধনের কাজে সাহায্য করত।’ আমরা বলেছি, এই লেখাটি তৈরি করার সময় অবশ্যই চিত্রনাট্যকার সত্যজিতের হাতের পাশে ছিল ‘গল্পগুচ্ছ’-ভুক্ত ‘নষ্টনীড়’-এর পাঠ। সেই গল্পের মনোযোগী পাঠকরা এতক্ষণে নিশ্চয়ই আমার এ অনুমানের কারণটি বুঝে গিয়েছেন। যাঁদের হয়ত ততটা মনে নেই, তাঁদের জন্য সেই গল্পের সূত্রকথাটি ধরিয়ে দিই। রবীন্দ্রনাথের গল্প শুরু হচ্ছে, ভূপতির ইংরাজি কাগজ ‘বাহির করিতে হইল’ এই কথা বলে, তারপরে রয়েছে ‘তাঁহার উকিল শ্যালক উমাপতি’ ভূপতিকে বলল একটি কাগজ প্রকাশ করতে। বস্তুত সেই কথাতেই ‘শ্যালককে সহকারী করিয়া নিতান্ত অল্পবয়সেই ভূপতি সম্পাদকের গদিতে আরোহণ করিল।’ গল্পে ঠিক তার পরের প্রসঙ্গটি হল, ‘ধনীগৃহে চারুলতার কোনো কর্ম ছিল না।…. কাগজের আবরণ ভেদ করিয়া স্বামীকে অধিকার করা তাহার পক্ষে দুরূহ হইয়াছিল।’ এর ঠিক পরের প্রসঙ্গটি কাহিনিতে ছিল এই রকম: যুবতী স্ত্রীর প্রতি ভূপতির এই উপেক্ষা লক্ষ করে তার কোনো নিকটাত্মীয়া তাকে ভর্ৎসনা করলে ভূপতির মনে হয় ‘তাই তো, চারুর একজন কেউ সঙ্গিনী থাকা উচিত, ও বেচারার কিছুই করিবার নেই।’ ইত্যাদি। পাঠক নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন, রবীন্দ্রনাথের গল্পের ঘটনা-গতি আর সত্যজিতের এই প্রথম খসড়া-র গতি আর ভাষা  হুবহু এক। এরপরে এমনকি গল্পের পাঠকের মনে থাকবে, অমল সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন ‘অমল থার্ড ইয়ারে পড়িতেছিল’, গল্পকার ওই বাড়ির মধ্যেই বাগান বানাবার পরিকল্পনার কথা, এমনকি চারুর ভ্রাতৃবধূ মন্দাকিনীর বলা, ‘এত বেলায় বাগানে তোরা কী করছিস?’ আর তার উত্তরে চারুর মুখে বলা ‘পাকা আমড়া খুঁজছি’--- এই সবটাই একেবারে মূল গল্প থেকে উঠিয়ে নিয়ে, তাকে আরেকবার লিখছেন সত্যজিৎ, তাঁর খেরোর খাতায়। দেখা যাবে, ঠিক এইভাবে পুরো গল্পটাকেই আরেকবার নিজের মতো প্লট-অনুসারে একটার পর একটা ঘটনা পরম্পরায় বসানোর কাজটি সত্যজিৎ করলেন পুরো চিত্রনাট্য প্রস্তুতির প্রথম পর্বে।

এমনকি মূল গল্পে যেমন অমলের ভূপতির বাড়ি ছেড়ে ইংল্যান্ড যাওয়ার প্রসঙ্গ ছিল আর তার চিঠির জন্য চারুর উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠার কথা ছিল এমনকি স্বামী ভূপতিকে লুকিয়ে চারুর-পাঠানো টেলিগ্রামের উত্তরটি ভূপতির হাতে-পড়ার কাহিনিটি ছিল, এই প্রথম খসড়াতে সেই কাহিনিসূত্রটিই লিখেছিলেন সত্যজিৎ। তিনি লিখছেন: ‘বিলেতের চিঠি। চারুর উদ্বেগ। টেলিগ্রাফের কথা ভূপতি জানতে পারল চারু টেলিগ্রাম করেছে। ভূপতির realization…. Crisis’। রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, এই ঘটনার পর ভূপতি চারুর মন সম্পর্কে অনুমান করে সে চারুর জন্য যে লেখাগুলি লিখেছিল সেগুলি পুড়িয়ে ফেলে। সত্যজিৎও সেখানেই তাঁর গল্পসূত্র শেষ করে লিখলেন, ‘ভূপতি-চারু crisis। ভূপতি তার লেখা পুড়িয়ে ফেলে। চারুর উপর ভূপতির Sympathy। ভূপতি দূরে সরে যায়।’ এইভাবেই প্রথম খসড়ায় ‘নষ্টনীড়’-এর গল্পসূত্র শেষ করেছিলেন সত্যজিৎ। ভারি আশ্চর্যের বিষয় হল, এখানে একটি কাহিনির পুনর্লিখন। সত্যজিৎ আক্ষরিক অর্থেই একদিকে মূল বইয়ের টেক্সটটিকে রেখে, সেটির ভাষা ও ঘটনাপ্রসঙ্গ হুবহু ব্যবহার করে নিজের মতো করে ‘নষ্টনীড়’-এর মতো বেশ আকারে-বড়ো গল্পটিকে মাত্র পাঁচটি পাতার মধ্যে সাজিয়ে নিলেন। নিশ্চিতভাবে বলা দরকার, সত্যজিতের পাশে রবীন্দ্রনাথের লেখা গল্পটি ছিলই-ছিল। যেমন, আরেকটি জায়গাতে সত্যজিৎ লিখছেন, ‘চারু: এসো আমরা কাগজ বের করি--- হাতে লেখা কাগজ--- আমরাই লেখক--- আমরাই পাঠক।’ তার পাশে একটি বন্ধনীর মধ্যে দুটি শব্দ লেখা: ‘চারুপাঠ’ আর ‘অমলা’। মূল গল্পের ষষ্ঠ পরিচ্ছেদে দেখি, চারু বলে, ‘ঠাকুরপো, এসো আমরা একটা মাসিক কাগজ বের করি। কী বলো।’ তারপরে সে জানায়, ‘আমাদের এ কাগজে কোনো খরচ নেই। ছাপা হবে না তো। হাতের অক্ষরে লিখব। তাতে তোমার আমার ছাড়া আর কারও লেখা বেরোবে না, কাউকে পড়তে দেওয়া হবে না। কেবল দু-কপি করে বের হবে। একটি তোমার জন্যে, একটি আমার জন্যে।’ রবীন্দ্রনাথের লেখা চারুলতার সংলাপ ‘তাতে তোমার আমার ছাড়া আর কারও লেখা বেরোবে না, কাউকে পড়তে দেওয়া হবে না’ বাক্যটিই সত্যজিতের লেখাতে হল, ‘আমরাই লেখক--- আমরাই পাঠক’। এবার কথা, ওই ‘চারুপাঠ’ আর ‘অমলা’ শব্দ দুটি কেন বন্ধনীর মধ্যে লিখলেন হঠাৎ সত্যজিৎ? মূল গল্পে ওই হাতে লেখা পত্রিকার নাম কী হবে, সেই আলোচনায়, ঠাকুরপো অমল, তার প্রিয় বৌঠানের নামটির সঙ্গে ধ্বনিসাদৃশ্যে বলে, ‘কাগজের নাম দেওয়া যাক চারুপাঠ’ আর বৌঠান তার প্রিয় দেবর অমলের নামের সঙ্গে মিলিয়ে বলে, ‘না, এর নাম অমলা’। ছবিতে এই প্রসঙ্গটি আসেনি। কিন্তু এই বন্ধনীভুক্ত শব্দাবলি বসানোর একের পর এক সূত্র ধরে স্পষ্ট সত্যজিৎ প্রথমে রবীন্দ্রনাথের গল্পটিকে পাশে রেখে তাকে সাজালেন। তারপরে দ্বিতীয় খসড়াতে তাকে সাজালেন নিজের ছবির যুক্তিতে।

শুভেন্দু দশমুন্সী

সত্যাজিতের খেরোর খাতা

''সত্যজিৎ রায়ের উপরে, বা বলা ভালো সত্যজিৎ রায়ের কাজের উপরে বই পড়ছি গত কয়েক মাস ধরেই। এই বইটা কার থেকে পেয়েছিলাম মনে নেই, সম্ভাবত আরেক মানিক-প্রেমী বন্ধুর গুগল ড্রাইভ থেকে নিজের ড্রাইভে নিয়ে রেখেছিলাম।


সুনীত সেনগুপ্ত সম্পর্কে তেমন কোন তথ্যাদি পেলাম না গুগল করে, বইতে লিখেছেন সত্যজিতের সংস্পর্শে এসেছেন পরে সন্দীপ রায়ের কল্যাণে সত্যজিতের নোটবুকগুলোর কিছু দেখেছেন। লেখক সম্পর্কে কারও কাছে তথ্য থাকলে অনুগ্রহ করে দিতে অনুরোধ রইলো।

বইটা লেখা হয়েছে সত্যজিৎ রায়ের কিছু সিনেমা আর সেগুলো সম্পর্কে তার নিজের নোট করা টুকরোর উপর নির্ভর করে। বইতে সত্যজিতের রাফ খাতা থেকে তাঁর আঁকিবুকি, লেখা, কাটাকুটি তুলে দেয়া হয়েছে যা বিশেষ আকর্ষণীয়। বিশ্লেষণ করা হয়েছে কোন কোন ছবির কোন কোন বিশেষ দৃশ্যের দৃশ্যায়নের পেছনে সত্যজিতের নিজের ভাবনা খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে৷ এই বিশ্লেষণ লেখকের নিজের এবং পাশাপাশি সত্যজিতের নিজের নানান সাক্ষাৎকারকে কাজে লাগিয়ে তুলে ধরা।

আমার নিজের বিশেষ পছন্দের তিনটি সিনেমা 'পথের পাঁচালী', 'পরশপাথর' আর 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' -এর অংশগুলো বেশি ভালো লেগেছে পড়তে, স্বাভাবিকভাবেই।

বইতে উল্লেখিত কয়েকটা সিনেমা দেখা হয়নি এখনো, তাই তার কিছু অংশ আপাতত স্কিপ করে গেছি, কারণ অনেক বেশি বিস্তৃত করে বর্ণনা, তাই আগে থেকে দেখা না হলে সিনেমাগুলো প্রথমবার দেখার মজাটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে মনে হচ্ছিলো। তবে ইচ্ছা আছে শিঘ্রই সিনেমাগুলো দেখে ঐ অংশগুলো আরেকবার পড়ে দেখার।

আমার নিজের আরও ভালো লাগতো যদি ক্যামেরার কাজ আর দৃশ্যায়ন নিয়ে আরো বেশি টেকনিকাল লেখা হতো, কিন্তু এই বইটাতে বরং দৃশ্যের ভাবানুরাগ বিশ্লেষণই মুখ্য মনে হয়েছে৷ তাও, খারাপ লাগেনি পড়তে।
 

ফারহানা সুফি



সম্পাদনা : নাসরিন জয়া হক

সৌজন্য : 
পিয়া ব্যানার্জি, আকাশবানী কলকাতা।
শুভেন্দু দাশমুন্সী, আনন্দবাজার।
ফারহানা সুফি, গুডরিডস।
খেরোর খাতার পৃষ্ঠাগুলো সত্যজিৎ রায়ের গুপি গাইন, বাঘা বাইন ও হীরক রাজার দেশে সিনেমার।
খেরোর খাতার ছবি সৌজন্য, সুনীত সেনগুপ্ত।