।।জুবাইদা আহমেদ।।কাকলী সরকার।।
ক্ষ্যাপা কাব্য
একবার সেই বইমেলাতে
একটু খেয়াল এলো যখন,
হাতটি ধরে বলেছিলাম
বন্ধু থেকে বউ হবোখন!
তোর হাসিটা আকাশ বাতাস
কাঁপিয়েছিলো পুরো বিকেল,
এর পরেরটুকু আর মনে নেই
কি বলেছিলিস তখন!
চোখের সামনে সময় চলে
খেয়াল এসে খেয়াল ঝরে,
শেষ আলোতে তোর হাসিমুখ
বুকের মধ্যে রইলো পড়ে।
ক্ষ্যাপাটে এই, এই আমিটা
যতই ভাবি সব গোছাবো!
তোর হাসিটা বড্ড জোরে
বুকের ভেতর কড়া নাড়ে।
তাই ভেবেছি এইতো ভালো
আউল বাউল জীবন আমার!
এমন করে দিন কেটে যায়,
সময় হবে চলে যাওয়ার।
২৫/১১/২০২০
বয়স তখন ১২
বাবার অফিসের বড়বাবুর দুই মেয়ে
ওরাই আমার প্রিয় বন্ধু
লিলি, রিতা, দুবোন।
সারাদিন হাসছি খেলছি,
ও বাড়ির শুক্ত আনছি
এ বাড়ির ফিরনি নিচ্ছি...
এই করে খুব সুখে আনেকটা দিন
এরপর শুনি কানাঘুষা
তারপর কথা বন্ধ...।
আমি গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে
লোলুপের মতো তাকিয়ে ওদের
বারান্দাটার দিকে...।
এরপর মা এর হাত টা
পিঠের উপর,
শুনলাম ওদের নাম টায় দোষ!
চক্রবর্তী না হয়ে খান, রাহমান
এমন কিছু হলে, ল্যাঠা চুকত।
আমি ভাবলাম
নাহয় ওদের বলি
ভাই, তোরা তোদের চক্রবর্তী
আমায় দে ভাই, তাও তো আমি
আসতে পারি আমার প্রিয় বারান্দাতে।
২৫/০৬/ ২০১২
জুবাইদা আহমেদ
লন্ডন, যুক্তরাজ্য
সপ্ত সত্য
সৃষ্টি
আমার জীবনের ক্ষয়ে যাওয়ার দিনের পরে
তুমি এসেছিলে এক মানুষ হয়ে এক মানুষীর মনে।
বোধ
শূন্য মনে আলো অন্ধকারে,
মাথার ভিতরে বোধ কাজ করে -
সবকিছু তুচ্ছ পন্ড মনে হয়
তোমার ওষ্ঠ ছুঁইয়ে আমার কপাল চুম্বনে।
তৃষ্ণা
মরমিয়ার চোখে তৃষ্ণা আছে
তারি খোঁজে ছুটে চলি ছায়া ও স্বপ্নের কাছে।
বন্ধুত্ব
দুজন আজ চিরস্থায়ী
আকাশ ও মেঘের মতো পাশাপাশি,
যেখানে আকাশের শান্তি ও নিরবতা
সেখানে একান্ত বিশ্বাসে মেঘের একাত্মতা।
প্রেম
তোমার মুখের দিকে তাকালে
এক পলকে ডুবে যাই অথই অকুলে।
জীবন
মূল্যবান আসবাবে ভরা এক ঘর
তারমধ্যে প্রানহীন স্বপ্ন, আকাঙ্খা,
হৃদয়ে তুমি বিলুপ্ত প্রায় আমি।
মৃত্যু
তোমার নগ্ন নির্জন মুহুর্তে
আয়ুহীন স্তব্ধতা ও বিস্ময়।
২৪/০১/২০২১
কি চায় মানব
নিজেকে সামলাতে পাচ্ছি না,
চারপাশের মানব গুলো দানব হয়ে উঠেছে,
পাখির মতো উড়ে যাব?
কোথায় কত দূর দুরান্তে যেতে পারবো?
মনের গভীরে হারিয়ে নিজেকে ভুলাই;
কি শিক্ষা? কি সংস্কার? কি সমাজ?
এঁরা কিভাবে শুধু খেয়ে বেঁচে আছে,
এদের কি চর্চ্চা চলছে তাঁরা কি জানে?
তাল মেলানো সম্ভব নয়,
বারাবাড়ি বারান্দা পর্যন্ত চুপ থাকা যায়,
কিন্তু যখন প্রকাশ্যে রাস্তায় তখন!!
আর বোধ হয় মেনে নেওয়া ঠিক নয়,
মাঝে মাঝে প্রেম সঙ্গীতের নেশা হয়
কল্পনার পাহাড়কে পুষি যতনে
তাই বলে কি তেড়েফুঁড়ে উঠবো না!!
অন্ধকারের ভেতর ডানা মেলে উড়ি না
ভীড়ের মধ্যেও নিজেকে খুঁজে পাই
এখনো সময় আছে আয়নায় খুঁজে নাও
ভুলে যেওনা স্বাধীনতা আমরাও চাই।
সহ্য করে যাচ্ছি বলে ভেবোনা
যেদিন বিরুদ্ধে যাব কোন কুল পাবে না।
১৫/০৩/২১
দহনের শেষে
ভিনদেশী তারার মতো জ্বলজ্বল করে জ্বলছি,
চারদিকে আকাশ একটি বারও তাকিয়ে দেখছে না আমায়
মেঘগুলো আশপাশ দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাচ্ছে
আমি কিন্তু স্থির হয়ে আছি আমার দেবতা সূর্যের জন্য।
মুমূর্ষু ভালবাসার রিফিউজি শরনার্থীর মতো অপেক্ষা
কখন প্রত্যুষের সূর্য আলোকিত করবে আমায়,
তাঁর দীপ্ত দেহে জড়িয়ে আলিঙ্গনে আবদ্ধ করে নেবে
পূর্ণজ্ঞানের সাতটি স্তর পার হতে হবে এই মিলনে।
১৪/০৩/২১
কাকলী সরকার
ঢাকা, বাংলাদেশ
Cover painting, Lady with Veena by Maqbool Fida Husain